Lifestyle

টারমারিক পাউডার (Turmeric Powder): পুষ্টিগুণ, স্বাস্থ্য উপকারিতা ও ব্যবহার

টারমারিক, বা হলুদ, একটি প্রাচীন মসলা যা হাজার হাজার বছর ধরে চিকিৎসা, খাদ্য, এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি Curcumlonga উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায় এবং ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ায় এর উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়।

টারমারিক পাউডার মূলত হলুদ গাছের শিকড় শুকিয়ে গুঁড়ো করে তৈরি হয়। এটি কেবল একটি মসলা নয়, বরং স্বাস্থ্যকর উপাদান এবং প্রাকৃতিক ঔষধি হিসেবে বহুল ব্যবহৃত।

টারমারিক পাউডারের পুষ্টিগুণ

টারমারিক পাউডারে নিম্নলিখিত উপাদানগুলো থাকে:

কারকিউমিন (Curcumin): এটি হলুদ গুঁড়োর প্রধান সক্রিয় উপাদান, যা শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

ভিটামিন ও খনিজ: ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ

ডায়েটারি ফাইবার (ক্যালরি): ১০০ গ্রাম টারমারিকে প্রায় ৩১২ ক্যালরি থাকে।

                   

টারমারিক পাউডারের স্বাস্থ্য উপকারিতা

১. প্রদাহ ও ব্যথা নিরাময়: কারকিউমিন প্রদাহ কমায় এবং আর্থ্রাইটিস (Arthritis), গাঁটের ব্যথা (Joint Pain), এবং মাসল পেইন (Muscle Pain) উপশমে কার্যকর।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: টারমারিক শরীরের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে। ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৩. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রভাব: এটি ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতি প্রতিরোধ করে, যা বার্ধক্য (Aging) এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।

৪. হজমশক্তি উন্নত করে: এটি পিত্তরসের (Bile) উৎপাদন বাড়িয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রিক ও পেটের ফোলাভাব কমাতে কার্যকর।

৫. হৃদরোগ প্রতিরোধ: কারকিউমিন রক্তের কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি রক্তনালীতে প্লাক জমা রোধ করে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।

৬. ত্বকের যত্ন: ত্বকের দাগ, ব্রণ এবং সংক্রমণ দূর করতে সহায়ক। একজিমা, সোরিয়াসিস ইত্যাদি ত্বকের রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।

৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: টারমারিক রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়।

৮. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি: টারমারিক স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং আলঝাইমার (Alzheimer's) প্রতিরোধে সহায়ক। এটি মস্তিষ্কের কোষ সুরক্ষা দেয়।

৯. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: কারকিউমিন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে এবং কেমোথেরাপির প্রভাব বাড়ায়।

                         


টারমারিক পাউডারের ব্যবহার

১. খাদ্য প্রস্তুতিতে: কারি, ডাল, ভাজি, এবং মাংস রান্নায় মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি খাবারে রঙ ও স্বাদ বাড়ায়।

২. পানীয়: গোল্ডেন মিল্ক (Golden Milk): দুধে হলুদ মিশিয়ে পান করলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়। চায়ে হলুদ মিশিয়ে পান করা যায়।

৩. ত্বকের যত্নে: টারমারিক পাউডার মধু, দই বা বেসনের সঙ্গে মিশিয়ে ফেস প্যাক হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি ত্বক উজ্জ্বল করে এবং ব্রণের দাগ কমায়।

৪. ঔষধি ব্যবহার: ঠাণ্ডা-কাশি কমাতে গরম পানিতে হলুদ ও মধু মিশিয়ে পান করা হয়। ক্ষতস্থানে হলুদের পেস্ট লাগানো সংক্রমণ রোধ করে।

৫. ফাংশনাল মেডিসিনে: ফাংশনাল মেডিসিনে টারমারিক প্রদাহ, ডায়াবেটিস, এবং হজম সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয়।

                 

সতর্কতা

অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করলে পেটের সমস্যা বা ডায়রিয়া হতে পারে।গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া  উচিত। প্রতিদিন ১-২ চা চামচ টারমারিক পাউডার (প্রায় ৩-৫ গ্রাম) নিয়মিত খাওয়া শরীরের জন্য নিরাপদ।

শিমু দাশ সন্ধি
ফাংশনাল নিউট্রিশনিস্ট এবং ডায়েট কনসালটেন্ট
ইন্টিগ্রেটেড মেডিকেয়ার লিমিটেড।

3 Comments
    • Mohammed Ali
    • January 15, 2021

    Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Repellendus at doloremque adipisci eum placeat quod non fugiat aliquid sit similique!

    Reply
    • Simon Albert
    • January 15, 2021

    Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Repellendus at doloremque adipisci eum placeat quod non fugiat aliquid sit similique!

    Reply
    • Mohammed Ali
    • January 15, 2021

    Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Repellendus at doloremque adipisci eum placeat quod non fugiat aliquid sit similique!

    Reply
Leave a Reply

Your email adress will not be published ,Requied fileds are marked*.

Categories
ads

Get The Best Blog Stories into Your inbox!

Sign up for free and be the first to get notified about new posts.